তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত নাকি নফল

তাহাজ্জুদ নামাজ হলো ইসলামের একটি বিশেষ নফল নামাজ, যা রাতের শেষ অংশে আদায় করা হয়। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং মহৎ একটি ইবাদত, যা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিয়মিত আদায় করতেন এবং মুসলিম উম্মাহকে তা আদায়ের পরামর্শ দিয়েছেন। যদিও এটি ফরজ নয়, তবে এর গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক বেশি।

তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত

১. আল্লাহর কাছে প্রিয় ইবাদত: তাহাজ্জুদ নামাজ আল্লাহর কাছে অত্যন্ত প্রিয় ইবাদত হিসেবে গণ্য হয়। কুরআনে আল্লাহ বলেন, “আপনার প্রতিপালক জানেন যে, আপনি ও আপনার সঙ্গে যারা আছেন, তাদের এক দল প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ রাত, অর্ধেক রাত এবং এক-তৃতীয়াংশ রাত দাঁড়িয়ে ইবাদত করেন…” (সুরা আল-মুজাম্মিল, ৭৩:২০)।

২. গুনাহ মাফ ও জান্নাতের প্রাপ্তি: তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহ বান্দার গুনাহ মাফ করেন এবং জান্নাতের দরজা খুলে দেন।

৩. দোয়া কবুল হওয়া: রাতের এই সময়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করলে তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “রাতের শেষ তৃতীয়াংশে আল্লাহ পৃথিবীর আকাশে অবতরণ করেন এবং বলেন, কে আছো আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দেবো।” (সহীহ বুখারী)

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম

তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য কোনো নির্দিষ্ট রাকাত সংখ্যা নেই, তবে সাধারণত ২ রাকাত থেকে ৮ রাকাত পর্যন্ত পড়া হয়। আপনি চাইলে এর চেয়ে বেশি রাকাতও পড়তে পারেন। তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের নিয়ম হলো:

১. উঠে ওজু করা: রাতের শেষ তৃতীয়াংশে উঠা এবং ওজু করা।

  1. নিয়াত করা: তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়াত করা।
  2. রাকাত সংখ্যা নির্ধারণ: ২ রাকাত করে নামাজ আদায় করা। ৪, ৬, ৮ বা এর চেয়ে বেশি রাকাত পড়া যেতে পারে।
  3. কুরআন তিলাওয়াত: নামাজে কুরআনের বিভিন্ন সূরা তিলাওয়াত করা।
  4. দোয়া ও মোনাজাত: নামাজ শেষে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা ও মোনাজাত করা।

তাহাজ্জুদ নামাজ একটি নফল ইবাদত হলেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। এটি আল্লাহর কাছে খুব প্রিয় ইবাদত এবং এর মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে পারে। যারা নিয়মিত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন, তাদের জন্য আল্লাহর অসীম রহমত বর্ষিত হয়। তাই, মুসলিম হিসেবে আমাদের সবার উচিত এই নামাজের গুরুত্ব বোঝা এবং যথাসম্ভব তা আদায়ের চেষ্টা করা।

About ফাহাদ মজুমদার

Check Also

আমস্টারডামে ইসরায়েলি ফুটবল ভক্তদের সঙ্গে প্রতিবাদকারীদের সংঘর্ষ

আমস্টারডামের সিটি কাউন্সিলের একজন সদস্য বলেছেন, ‘মাকাবি হুলিগানরাই’ প্রথমে সহিংসতার সূচনা করে এবং ফিলিস্তিনপন্থী সমর্থকদের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *