ব্রণ হওয়ার কারণ ও প্রতিকারের উপায়

ব্রণ হওয়ার কারণ ও প্রতিকারের উপায়

ব্রণ, একটি চামড়ার সমস্যা যা শুরু হয় যখন তেল ও ত্বকের মৃত কোষ দিয়ে ত্বকের ছিদ্রগুলো বন্ধ হয়ে যায় । যখন আপনি আপনার ত্বকে অল্প কয়েকটি লাল দাগ খুজে পাবেন তখন বুঝে নিতে হবে যে আপনার রোগের মাত্রা বেশী তীব্র নয় । তীব্র ব্রন বলতে বুঝায় যখন আপনার গাল,গলা এবং পিঠ ছোট ছোট ফুসকুড়ি কিংবা বড় বড় ব্যাথাদায়ক পিন্ড দিয়ে ভরে যায় । কিশোর-কিশোরিদের মাঝে এটি বেশী দেখা যায় । সাধারণত কৈশোর পেরোনোর পর এটি ভাল হয়ে যেতে থাকে । কিছু নারীদের ক্ষেত্রে বড় হয়ে ওঠার সময় হয়তো তাঁদের সমস্যাটি হয়নি, প্রাপ্তবয়স্ক হবার পর তাঁদের এটি দেখা দিতে পারে ,প্রায়শই তাঁদের মাসিক শুরু হবার আগে আগে ।

আপনি ব্রন নিয়ে কতটা চিন্তিত তা হয়তোবা আপনার রোগটির তীব্রতার সাথে সম্পর্কযুক্ত নয় । অনেকেই তীব্র মাত্রার ব্রণ নিয়েও চিন্তিত থাকেনা আবার কেউ কেউ দুশ্চিন্তায় ভোগেন অল্প কয়েকটা দাগ নিয়ে । সুসংবাদ হচ্ছে বর্ণ নিয়ন্ত্রনের মধ্যে নিয়ে আসার জন্য ভাল চিকিৎসা রয়েছে ।

যে কারণে হয়

ব্রণ শুরু হয় যখন ত্বকের ছিদ্র শরীর থেকে নিঃসৃত তেল বা মৃত চর্ম কোষ দিয়ে বন্ধ হয়ে যায় । আর এই বন্ধ হয়ে যাওয়া অংশে জীবানুর সংক্রমণ হলে তখন তা ফুলে যেতে পারে কিংবা লাল হয়ে যায়,একই সাথে তীব্র ব্যাথা ও পুজ হতে পারে । বয়ঃসন্ধিকালে এটি বেশী দেখা যাওয়ার কারন হচ্ছে এ সময় হরমোন বেশী নিঃসৃত হয়, বিশেষত টেস্টোস্টেরন যার ফলে ত্বকের গ্রন্থিগুলো ত্বক রক্ষার জন্য অধিক হারে তেল নিঃসরন করে (সেবাম) যা ত্বককে আদ্র রাখে । ব্রন হয় যখন এই তেল মরা চর্ম কোষের সাথে মিশে লোমকুপগুলো আটকে দেয়, এই মিশ্রনে জন্মাতে পারে ব্যাকটেরিয়া । তেলযুক্ত প্রসাধনীর ব্যাবহার একে আরও খারাপ দিকে নিয়ে যেতে পারে । যদি তা ব্যাবহার করতেই হয় তবে এমন পণ্য ব্যবহার করতে হবে যেগুলো লোমকূপ বন্ধ না করার জন্য বিশেষভাবে তৈরি ,(নন কমিডোজেনিক) । করটিকাস্টেরইড বা লিথিয়াম ব্রন বাড়াতে ভুমিকা রাখতে পারে তাই আগে কোন ধরনের ওষুধ খেয়ে থাকলে তা ডাক্তার কে জানান ।

চিকিৎসা

দিনে এক থেকে দু’বার ত্বক ব্রনের জন্য যে সাবানে পাওয়া যায় তা দিয়ে ধোয়া এবং তৈলাক্ত প্রসাধনী ব্যাবহার পরিহার করুন । ব্রন খোটা বা চুলকানো পরিহার করার চেষ্টা করবেন । কারন তা নাহলে ত্বকে দাগ পরে যেতে পারে । অল্প কিছু ব্রনের জন্য বেনজল,পারঅক্সাইড অথবা সেলিসাইলিক এসিড যুক্ত ব্রন ক্রিম ব্যাবহার করতে পারেন,এগুলো ভাল কাজ করে লেবেলে যে নির্দেশনা দেয়া থাকে সেভাবে ব্যবহার করলে,তবে মাসখানেক ব্যবহারেও ভাল ফল না পাওয়া গেলে ডাক্তারের শরনাপন্ন হতে পারেন । সিস্ট হয়ে থাকলে ডাক্তার আইসোট্রেটেনাইন জাতীয় ওষুধ দিতে পারে ।

দাগের জন্য যা করতে পারেন

দাগ সরানোর জন্য রয়েছে লেজার সারফেসিং বা ডারমোব্রেসন,যা ব্রণের দাগ গুলোকে কিছুটা ভাল করে দিতে পারে বা ডাক্তার আপনাকে প্লাস্টিক সার্জনের কাছেও পাঠাতে পারে । কোন চিকিৎসাটি আপনার জন্য ভাল হবে তা নির্ভর করে আপনার ত্বকের অবস্থার উপরে । কিছু কিছু প্রসাধনী ব্যাবহারে আপনার ত্বক সূর্যের আলো সংবেদনশীল হয়ে যেতে পারে । তাই আপনার ত্বককে সূর্যের আলো বা অন্যান্য অতিবেগুনী রশ্মি থেকে বাচিয়ে চলুন ।

যদিও ব্রন প্রতিরোধ করা সম্ভব নয় তবে একে আরও খারাপের দিকে যাওয়া ঠেকানোর জন্য যা করতে পারেন –

  • মৃদুভাবে ত্বক পরিষ্কার করুন , জোরে ঘষবেননা বা বার বার সাবান দেয়া বিশেষ করে অতিরিক্ত সুগন্ধিযুক্ত সাবান লাগাবেননা
  • আপনার চুল তৈলাক্ত হলে তা নিয়মিত ধুতে হবে এবং খেয়াল রাখবে তা যেন আপনার মুখমণ্ডলে না পরে থাকে
  • চুলে জেল,ক্রিম বা পমেড ব্যবহার পরিহার করুন কারন এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে তেল থাকে
  • বার বার মুখে হাত দেয়া যাবেনা
  • পেট্রোলিয়াম জেলি বা তৈলাক্ত প্রসাধনী ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন

About ফাহাদ মজুমদার

Check Also

বাতের ব্যথার আধুনিক চিকিৎসা

বাতের ব্যথার আধুনিক চিকিৎসা বর্তমানে বিভিন্ন ধরণের উন্নত ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। চিকিৎসার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *