মারিনা আব্রামোভিচের ভয়ংকর এক্সপেরিমেন্ট

মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। প্রতিবেশী প্রাণীরা অতিষ্ঠ এই সেরা সৃষ্টির মানবিক সহযোগিতায়। আচ্ছা প্রাণী, বৃক্ষদের কথা বাদ দেই কারন খাদ্যচক্রের দোঁহাই দিয়ে এড়িয়ে যাওয়া যায়। তাহলে, মানুষ মানুষের সাথে কী করেছে গত দুই শতকে একটু স্মরণ করি। ওহ, দুইটা বিশ্বযুদ্ধ, মিলিয়ন মৃত্যু, ধর্ষণ, লুট, বর্ণবাদ আর কী আছে? আচ্ছা এই জিনিসগুলিও বাদ দিতে বলবেন কারন ক্ষমতালোভী রাজনীতিবিদরা আছেন তার পিছনে। তারা কি মানুষ? আচ্ছা তাহলে একটা এক্সপেরিমেন্ট নিয়ে আলোচনা করি আজ, যেখানে ১৯৭৪ সালে যুগোস্লাভিয়ার চিত্রগ্রাহক, পারফর্মেন্স আর্টিস্ট মারিনা আব্রামোভিচ সাহস করে অংশগ্রহণ করেন। সাহসই বলতে হবে কারন এক্সপেরিমেন্টটা ছিল ভয়ংকর যদিও প্রশ্ন ছিল সাধারণ যেখানে উদ্দেশ্য ছিল মানুষের মানবিকতা, সততার বিচ্যুতি ঘটে কখন তা জানার।
এইবার এক্সপেরিমেন্ট নিয়ে শুরু হোক গল্প। মারিনা আব্রামোভিচ ৬ ঘণ্টা দাড়িয়ে থাকবে যেখানে এক্সপেরিমেন্ট এর অংশগ্রহণকারীরা যা ইচ্ছা তাই করতে পারবে তার (মারিনা) সাথে। সামনে আছে একটি টেবিল যেখানে আছে ৭২টি বস্তু আছে যা ব্যাবহার করা যাবে মারিনার উপর!আর এর দায়ভার শুধু মারিনারই। ৭২ টা আইটেমের মধ্যে ছিল গোলাপ, অলিভ অয়েল, এমনকি বুলেট সহ পিস্তলও।
ওই ছয় ঘণ্টায় যা ঘটেছিল তা ছিল লোমহর্ষক। প্রথমদিকে অংশগ্রহণকারীর একজন তাকে ঘুরিয়ে দেখতে শুরু করলো। তারপর কেউ করে আন্তরিক ভাবে স্পর্শ । তৃতীয় ঘণ্টায় ব্লেড দিয়ে কেটে ফেলা হল পরনের কাপড়। চতুর্থ ঘণ্টায়, সেই একই ব্লেড ব্যাবহার করা হল অঙ্গে। সামান্য যৌন অত্যাচার চলল। এতো খারাপ অবস্থায় থাকার পরেও মারিয়া অনড় ছিল জানার জন্য যে আর কী ঘটতে পারে, লুকানো মানবিক পৈশাচিক আনন্দ আর কোন পর্যায় যেতে পারে!
তবে শেষের দুই ঘণ্টায় অবস্থা আরও খারাপ দিকে অগ্রসর হচ্ছিলো।
মারিনা আব্রামোভিচ নিজের মুখের বাণী ছিল আরও হৃদয়বিদারক যেখানে এক্সপেরিমেন্ট শেষে তিনি বলেছিলেন,”আমার মনে হয়েছে আমি ধর্ষিত হয়েছি, কাটা হয়েছে কাপড়, আর গোলাপের কাঁটা গুলো বিঁধানো হয়েছে আমার পেটে”
এক্সপেরিমেন্ট শেষে, মারিনা আব্রামোভিচ মুখোমুখি হয় অংশগ্রহণকারীদের মাঝে। মজার ব্যাপার হচ্ছে তাদের মাঝে ছিল না অনুশোচনা, তারা এমনকি মারিনার দিকে তাকিয়ে দেখার চেষ্টাও করে নাই। এমনভাবে ব্যাবহার প্রদর্শিত হয়েছিলো যে তারা ভুলেই গিয়েছে তারা কি করেছে!

আচ্ছা মানুষ কখন খারাপ কাজ করে? কোন পর্যায়ের কেমিক্যাল ইম্বেলেন্সে এসে যায় এই পৈশাচিক ব্যাবহার?

তথ্য সূত্রঃ

About ফাহাদ মজুমদার

Check Also

আমস্টারডামে ইসরায়েলি ফুটবল ভক্তদের সঙ্গে প্রতিবাদকারীদের সংঘর্ষ

আমস্টারডামের সিটি কাউন্সিলের একজন সদস্য বলেছেন, ‘মাকাবি হুলিগানরাই’ প্রথমে সহিংসতার সূচনা করে এবং ফিলিস্তিনপন্থী সমর্থকদের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *