টেক্সাসে দুই ভাই নিজ পরিবারের সবাইকে হত্যার পর আত্মহত্যা করেছে

১৯ বছর বয়সী টেক্সান ফারহান তৌহিদের আত্মহত্যা আগের দীর্ঘ নোটটি সপ্তাহ শেষে ইনস্টাগ্রামে উঠেছিল, যা শুরু হয়েছিল ভয়ানক এক আত্মস্বীকৃতি দিয়ে “হেলো সবাই। আমি নিজেকে এবং আমার পরিবারকে হত্যা করেছি। ”

পরিবারের এক বন্ধু ১১ পৃষ্ঠার চিঠিটি দেখে তারা দ্রুত পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন এবং সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে তৌহিদ আত্মঘাতী।

সোমবার ভোরে পুলিশ টেক্সনের অ্যালেনের লাল ইটের বাড়িটিতে প্রবেশ করে একই পরিবারের ছয়জনকে মৃত অবস্থায় পেয়েছিল। নিহতরা হচ্ছেন ফারহান তৌহিদ, তার ভাই তানভীর তৌহিদ, ২১; তাঁর বাবা তৌহিদুল ইসলাম, ৫৪; তাঁর মা, ইরেন ইসলাম, ৫৬; তাঁর দাদি আলতাফুন নেসা, ৭৭; এবং তার ১৯ বছর বয়সী যমজ বোন ফারবিন তৌহিদ।

পুলিশ জানিয়েছে, ফারহান ও তানভীর তৌহিদ এক মাস ধরে এই পরিকল্পনা করেছিলেন।

“দেখে মনে হচ্ছে দু’টি ছেলে আত্মহত্যা করে মারা যাবার ব্যপারে একমত হয় এবং ঠিক করেন তারা তাদের পরিবারের সদস্যদেরও সাথে নিয়ে যাবেন,”বলেন পুলিশ বিভাগের সার্জেন্ট জন ফেল্টি।

পুলিশ কখন এই মৃত্যু হয়েছে তা নিশ্চিত করতে পারেনি তবে জানিয়েছেন যে সম্ভবত শনিবার রাতে এই দুই ভাই তাদের পরিবারের সদস্যদের হত্যা করেছে।

প্রায় ১৫ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসা এই পরিবারের আত্মঘাতী হত্যাকান্ডে পরিবারের বন্ধুরা ও প্রতিবেশীরা হতবাক হয়ে পড়েন।

ওয়াশিংটন পোস্টকে নিহতদের পারিবারিক বন্ধু সায়েদ চৌধুরী বলেন, “আমরা বিশ্বাস করতে পারছিনা এই পরিবারে এটা ঘটেছে।” “তাদের পরিবারটি খুবই অমায়িক । আমরা তো পরিবারের কোন সমস্যা দেখিনি।

চৌধুরী বলেন, তৌহিদ পরিবার ডালাসের উত্তরের শহরতলি অ্যালেনে আসার আগে প্রথমে নিউইয়র্কে বসতি স্থাপন করেছিল। তাদের বাবা তৌহিদুল তথ্য প্রযুক্তিতে কাজ করেছিলেন এবং তার স্ত্রী আইরিন সংসার এবং সন্তানদের দেখাশোনা করতেন। এক প্রতিবেশী ডালাস মর্নিং নিউজকে জানিয়েছেন, দাদী আলতাফুন বাংলাদেশ থেকে বেড়াতে এসেছিলেন এবং গত সপ্তাহে দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছিলেন, মহামারীজনিত কারণে তার ফ্লাইট স্থগিত হয়ে যায়।

ফারহান লিখেছেন যে তিনি নবম শ্রেণি থেকেই হতাশায় ভুগছিলেন এবং বারবার নিজের ক্ষতি করেছিলেন। তার পরিবার তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তিনি বলেছিলেন যে তাঁর মানসিক সমস্যাগুলি সম্প্রতি আরও খারাপ হয়ে গেছে। তিনি অস্টিনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন, তিনি লিখেছেন, এক রুমমেটকে তিনি তার পরিবারকে হত্যার পরিকল্পনা জানানোর কারনে তার রুম থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।

অবশেষে, এই জুটি তাদের পরিবার এবং নিজেদের হত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বলে তিনি লিখেছিলেন। নোটটিতে লেখা আছে, “আমার আত্মহত্যার পরে পরিস্থিতি মোকাবিলার করতে দেবার পরিবর্তে আমি তাদেরকে আমার সাথে নিয়ে ঝামেলা মুক্ত করতে পারি।”

ঠিক কখন ফারহান ইনস্টাগ্রামে নোটটি পোস্ট করেছিলেন তা স্পষ্ট নয়, তবে পুলিশ জানিয়েছে যে সোমবার সকাল ১১ টার দিকে অফিসাররা বাসায় এসেছিলেন।

ফেলটি বলেন, “আমার এখানে থাকার ২১ বছরের মধ্যে এরকম কোন ঘটনা দেখিনি। “এটি একটা মর্মান্তিক ট্র্যাজেডি। এটি বর্ণনা করার মতো আর কোনও ভাষা নেই। ”

ফেল্টি বলেছিলেন, প্রতিবেশীর কেউই গুলি ছোঁড়ার শব্দ শোনেনি এবং পুলিশ এলাকায় গুলি চালানোর কোনও খবর পায়নি। তিনি আরও জানান, পরিবারটি কখনও পুলিশকে কোনও সমস্যার কথা জানাননি।

তথ্য উৎস – https://www.washingtonpost.com/nation/2021/04/06/texas-family-murder-suicide/?utm_campaign=wp_main&utm_medium=social&utm_source=facebook&fbclid=IwAR3MnWUBzo2J7TX9E7A0pZQRTivmIuPjtc1wRJXFaIfBGRmyXdDrOzoK2jU

About ফাহাদ মজুমদার

Check Also

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজু

মালদ্বীপের রাজনীতিতে মোহামেদ মুইজু এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম। ২০২৩ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *